5/5 - (3 votes)

বিয়ের প্রকৃত স্বাদ জীবনে একবারই পাওয়া যায়। বিয়ে মানেই কেনাকাটার লম্বা লিস্ট, বিশাল খরচের ধাক্কা। সবাই চায় তার বিয়েটা পৃথিবীর সেরা বিয়ে হোক। কী ভাবে সাজবেন, কী ড্রেস আপ করবেন, অতিথি কারা আসবেন, কেমন পোজ দিয়ে ছবি তুলবেন, মেনুতে কি থাকবে ইত্যাদি সব কিছু নিয়েই আমাদের অনেক পরিকল্পনা থাকে। সেই স্বপ্নপূরণ করতে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিয়ের খরচ চলে যায় নাগালের বাইরে। তাই বিয়েতে শুধু সাধ নয়, সাধ্যও থাকতে হবে।

বিয়েতে অতিরিক্ত খরচ করা বা বড় ধরনের আড়ম্বর করা আল্লাহর রাসূল (সা.) সুন্নাহর পরিপন্থী। রাসূল (সা.) বলেন-

”সবচেয়ে বরকতময় বিয়ে হচ্ছে সেটি, যেখানে খরচ কম হয়ে থাকে”।

কম খরচ বলতে যা বোঝানো হয়েছে, একজন ব্যক্তির সামর্থ্য রয়েছে, সে সামর্থ্য অনুযায়ী লোকদের আপ্যায়ন করবে বা মেহমানদারি করবে। কিন্তু কম খরচ বলতে এটা বোঝায় না যে একেবারেই খরচ না করা, যেটাকে কৃপণতা বলা হয়ে থাকে। মানে লোকদের খাওয়ালেন না, আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত দিলেন না, বিয়ে হয়েছে জানালেন না, তাহলে এটা সৌন্দর্যের পরিপন্থী।

যাদের কম খরচে বিয়ের সমস্ত আয়াজন করতে চান- এই তালিকা তাদের জন্য।

বাজেট নির্ধারণ করুন

বিয়ের প্রস্তুতির এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো উপযুক্ত বাজেট নির্ধারণ করা। তাই দুই পক্ষের পরিবারের সঙ্গে বসে যদি বিয়ের একটি নির্ধারিত সূচি তৈরি করেন, তাহলে ব্যয় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে। বিয়ের সমস্ত কাজ করার আগে একটা লিস্ট বানিয়ে রাখুন। অবশ্যই বাড়ির সকলের উপস্থিতিতে কাজটি করবেন, যাতে আপনি ভুলে গেলেও অন্যরা তা মনে করিয়ে দেয়। এরপর আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী প্রয়োজনীয় খাতগুলোতে খরচ করুন। দেখবেন অনেক খরচ কম হবে।

আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে

সম্ভাব্য খরচের খাত

বিয়েতে যে খাতগুলোতে খরচ করতেই হয় সেগুলো হচ্ছে—
বিয়ের পোশাক, গয়না, লোকেশন, ইনভাইটেশন কার্ড, ডেকোরেশন, খাবার মেন্যু, ফোটোগ্রাফি, গাড়ি ভাড়া করা, হানিমুন ইত্যাদি।

অফ সিজনে বিয়ে করুন

প্রায় সবাই ধারণা করেন, বিয়ের জন্য উপযুক্ত সময় হলো শীতকাল। কিন্তু নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিয়ের তথাকথিত মৌসুম এড়িয়ে অন্য সময় বিয়ে করুন, দেখবেন সাজ-পোশাক থেকে শুরু করে হল বুকিং- সবখানেই খরচ অনেকটাই কমে গেছে!

অফ সিজনে কেনাকাটা

খরচ কমানোর জন্য অফ-সিজনে কেনাকাটা সেরে নিন। গরমকালে পোশাক, গয়না, বিয়ের জুতো ইত্যাদির খরচ বেশ কম থাকে। ঋতু ও বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে বছরের বিভিন্ন সময়ে শপিং সেন্টারগুলোতে নানা রকমের ডিসকাউন্ট থাকে। সেগুলোর দিকে নজর রাখুন। ডিজাইনার পোশাক না কিনে ব্র্যান্ডেড দোকান থেকে কিনলে অনেকটাই কম দামে ভাল মানের পোশাক পাবেন। প্রয়োজনে ড্রেস বানিয়ে নিন

বিয়ে এর গহনা

বিয়ের গহনা একটা বড় খরচের ব্যাপার। ব্র্যান্ডেড দোকানে গয়নার দাম বেশি হয়। তাই বিয়ে যখন ঠিক হবে তখন গহনা না কিনে আগে থেকে একটু একটু করে কিনে রাখুন। তাহলে বিয়ের সময় চাপ কম পড়বে।

ইনভাইটেশন কার্ড

বিয়ের জন্য দামি ইনভাইটেশন কার্ড করার কোনো মানে হয় না। বিয়ের জন্য অল্প দামে স্টাইলিশ কার্ড ছাপাতে পারেন। বড় দোকান বা ডিজাইনার কার্ড শপে গেলে দাম বেশি পড়বে। তাই নিজেই ডিজাইন করে কাস্টমাইজড কার্ড বানাতে পারেন। এতে কার্ড সুন্দর হবে, দামও থাকবে আয়ত্তে।

গেস্ট লিস্ট

বিয়েতে পরিবার, আত্মীয়-বন্ধুদের পাশে থাকা খুবই জরুরি। কিন্তু অতিথির তালিকা যদি লম্বা তখনই বাড়ে খরচ। সেই তালিকার অর্ধেক যখন বিয়েতে আসেনই না, তখন কপাল চাপড়ানো ছাড়া কিছুই করার থাকেনা। তাই বিয়েতে দাওয়াতীর লিস্ট ছোট করুন, এবং শুধু তাদেরই দাওয়াত দিন যারা আপনার অনেক কাছের। বহুদিন যোগাযোগ না থাকা অতিথিদের বাদ দিয়ে দেওয়াই ভালো। এতে খরচের পরিমাণটা কিছুটা কমবে।

বিয়ে এর ডেকোরেশন

বিয়েতে ফুলের খরচটা অনেক বেশি হয়। তাই যতটা সম্ভব মৌসুমি ফুল ব্যবহারের চেষ্টা করুন। স্টেজ সাজানো, গাড়ি সাজানো থেকে শুরু করে বাসরঘর সাজানো পর্যন্ত সব কিছুতেই দামি মৌসুমি ফুল ব্যবহার করুন। নান্দনিক অথচ খরচ কমবে এমন নকশাই বেছে নিন বিয়ের অনুষ্ঠান সাজাতে।

জমকালো লুক দিতে অনেকেই ডেকোরেশনে জোর দেন। অযথা ঝোমেলায় না গিয়ে অতিথি আপ্যায়ন ও সুন্দর ছবি ওঠার জন্য যতটা প্রয়োজন তার মধ্যেই সিম্পল এবং এলিগ্যান্ট ভাবেই ডেকরেশন করুন। এতে অতিরিক্ত খরচ এড়াতে পারবেন।

আবার দিনের থেকে রাতের অনুষ্ঠানে খরচ দ্বিগুণ হয়। তাই বিয়েতে যদি কম খরচ করতে চান তাহলে এর আয়োজন রাতে না করে দিনে করুন।

হল বুকিং

বিয়েতে লোকেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি হোটেল বা এক্সটিক লোকেশনে বিয়ের অনুষ্ঠান কেরতে চান তাহলে অনেক খরচ হবে। তাই সময় থাকতে থাকতে ঘুরে দেখে ব্যাঙ্কয়েট হল বুক করে নিন। তাড়াহুড়োয় হল বুক করলে ভাড়া বেড়ে যাবে। তাই প্রি বুকিং করলে বাজেট অনুযায়ী সুন্দর ব্যাঙ্কয়েট হল পেয়ে যাবেন। আর হল বুকিং এর ক্ষেত্রে অবশ্যই শুক্রবার এড়িয়ে চলুন।

আবার রাজসিক কমিউনিটি সেন্টারের বদলে বেছে নিতে পারেন অভিজাত চাইনিজ রেস্তোরাঁগুলো। এসব রেস্তোরাঁয় জায়গার হিসেবে নয়, রবঞ্চ জনপ্রতি খাবারের হিসেবেই ঠিক হয় খরচ। তাই বিয়ের মূল অনুষ্ঠান না হলেও হলুদ বা এনগেজমেন্ট এমন জায়গায় করলে খরচ কমে আসবে অনেকটাই।

বিয়ে এর কিছু আয়োজন বাসাতেই করুন

সম্ভব হলে এনগেজমেন্ট, গায়ে হলুদ বা মেহেদি সন্ধ্যার মত আয়োজনগুলো বাসায়ই সেরে ফেলুন। আলাদা করে কনভেনশন হল অথবা রেস্টুরেন্টের ভাড়ার খরচ বাঁচবে। আপনার বাসাকেই সুন্দর করে সাজিয়ে বেশ ভালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করুন।

একদিনে অনুষ্ঠান করুন

একদিনে বিয়ে এবং রিসেপশন করুন। তাতে সবার লাভ। এতে দুই পরিবার মিলে খাওয়াদাওয়া এবং অনুষ্ঠানের খরচ জোগায়। তাতে খরচ ভাগ হয়ে যায় দু’ভাগে। ফলে টাকা বাঁচে। আবার অতিথী যারা আসবে তারা একদিনে সব প্রোগ্রাম কাভার করতে পারবে।

খাবারে বৈচিত্রতা আনুন

বিয়ে বাড়িতে অতিথিদের খুশি করার প্রধান উপায় ভাল খাবার পরিবেশন করা। বিয়েতে খাবারে প্রচুর টাকা খরচ হয়। তাই অহেতুক বেশি পদ না বাড়িয়ে খাবারে বৈচিত্র আনুন। অল্প আইটেমের মধ্যেই সুস্বাদু খাবার পরিবেশনের চেষ্টা করুন। ট্রাডিশনাল খাবারের আয়োজন করতে পারেন। অথবা কোন ক্যাটারিং সার্ভিসের উপর ভার না দিয়ে নিজেরাও খাবারের আয়োজন করতে পারেন।

আত্মীয়-স্বজনদের উপহার

বিয়েতে আত্মীয়দের শাড়ি বা উপহার দেওয়ার নিয়ম আছে। তাই চেষ্টা করুন তালিকা বানিয়ে নিয়ে এক সঙ্গে সব উপহার কিনতে। এতে খরচ বাঁচাতে পারবেন। কোথায় পাইকারি দরে ভালো জিনিস পাওয়া যায় খোঁজ নিয়ে কিনে রাখুন আগেই।

বিয়ে ফটোগ্রাফি

ওয়েডিং ফটোগ্রাফি বিয়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নামকরা সংস্থা বা পেশাদার ফটোগ্রাফারকে দিয়ে ছবি তুললে এখন প্রচুর খরচ হয়। খরচ কমাতে ফটোশ্যুটের জন্য খুঁজে বের করুন নবীন ফটোগ্রাফার। কম খরচে তাদের কাছ থেকে ভালো কাজ পাবেন। এরা অনেক যত্ন সহকারে কাজ করে। ফ্রেশারদের মাথায় আধুনিক ছবি তোলার কৌশল কাজ করে বেশি। চাইলে ছোট ভাই, বোনকে দিয়েও ছবি তোলাতে পারেন।

ওয়েডিং প্ল্যানারের সাহায্য নিন

অনেকেই মনে করতে পারেন, ওয়েডিং-প্ল্যানারের কাছে গেলে বিয়ের খরচ বাড়বে। কিন্তু ওয়েডিং প্ল্যানাররা পেশাদারিত্বের সাথে বিয়ের আয়োজন করে থাকেন। তারা ভালোমতই জানেন বিয়ের কোথায় কি খরচ হয়, এবং কিভাবে তা কমানো যায়। তাছাড়া, ওয়েডিং প্ল্যানারদের সাথে অনেক সার্ভিস প্রোভাইডারদের যোগাযোগও থাকে। কমদামে তারা ডেকোরেটর, কেটারিং সার্ভিস ইত্যাদির ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন।

হানিমুন

বিয়ের পর হানিমুনের প্ল্যান করে রাখুন বিয়ের আগেই। প্লেনের টিকিট, হোটেল বুকিং আগে থেকে করে রাখলে খরচ কমতে পারে।

বিয়ের আয়োজনে সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সঙ্গতি থাকুক। অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে বিয়ের আনন্দ মাটি করবেন না।

বিয়ে সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য, সেবা, এবং পরামর্শ পেতে যোগাযোগ করুন তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার সাথে।
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com

52 COMMENTS

  1. Wow, wonderful blog layout! How lengthy have you been running a blog for?
    you made running a blog glance easy. The entire glance of your website is
    magnificent, as well as the content! You can see similar here
    sklep

  2. This is top-notch! I wonder how much effort and time you have spent to come up with these informative posts. Should you be interested in generating more ideas about Thai-Massage, take a look at my website FQ6

  3. It’s truly a great and useful piece of info.I’m happy that you just shared this useful information with us.Please keep us up to date like this. Thank you for sharing.

  4. incrível este conteúdo. Gostei muito. Aproveitem e vejam este conteúdo. informações, novidades e muito mais. Não deixem de acessar para saber mais. Obrigado a todos e até a próxima.

  5. When I originally commented I clicked the -Notify me when new feedback are added- checkbox and now every time a remark is added I get 4 emails with the same comment. Is there any manner you possibly can remove me from that service? Thanks!

  6. Heya i am for the first time here. I came across this board and I to find It truly helpful & it helped me out a lot. I’m hoping to provide one thing back and aid others such as you helped me.

  7. A fascinating discussion is worth comment. I do think that you ought to publish more about this topic, it may not be a taboo subject but typically folks don’t speak about these topics. To the next! All the best.

  8. Hi just wanted to give you a quick heads up and let you know a few ofthe pictures aren’t loading correctly. I’m not sure whybut I think its a linking issue. I’ve tried it in two different internet browsers and bothshow the same results.

  9. Hey there! I simply would like to give you a huge thumbs up for the great info you’ve got right here on this post.I will be coming back to your blog for more soon.

  10. I like the valuable information you provide in your articles.I’ll bookmark your blog and check again here frequently. I’m quite certain I will learn a lotof new stuff right here! Best of luck for the next!

  11. An interesting discussion is definitely worth comment. I think that you shouldpublish more about this topic, it may not be a taboomatter but usually folks don’t speak about such issues.To the next! Kind regards!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here