একজন নারীর জন্য সবচেয়ে সুন্দর সময় হচ্ছে গর্ভাবস্থা। গর্ভবতী মেয়েদের এ সময়টা আনন্দ, উত্তেজনা এবং একই সাথে ভয় সব মিলিয়ে সম্পূর্ণ নতুন এক পরিবেশ তৈরী হয়। আপনি মা হচ্ছেন জেনে প্রতিবেশী এবং মুরুব্বীরা আপনার গর্ভধারণের সময়টি কীভাবে অতিবাহিত করবেন, সেসব সম্পর্কিত পরামর্শের ঝুড়ি খুলে নিয়ে বসেন। কিন্তু এই সময়টায় আপনি এমন কিছু পরামর্শ ও ভুল ধারণার সম্মুখীন হতে পারেন, যা আসলে কুসংস্কার বা কল্পকথা ছাড়া আর কিছুই নয়।
গর্ভধারণ সম্পর্কে অনেকের মাঝেই ভুল ধারণা আছে। মন গড়া এসব ভ্রান্ত ধারণার কারণে গর্ভধারণের সময় অনেক ধরনের শারীরীক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় গর্ভবতী মা-কে। এসব ভুল ধারনা ও অজ্ঞতার কারণে অনেক বড় শারীরিক সমস্যা নিয়েও মাথা ঘামান না অধিকাংশ মানুষ। আজকে জেনে নিন গর্ভধারণ সম্পর্কে মারাত্মক কিছু ভুল ধারণা সম্পর্কে।
গর্ভবতী মা–কে দুজনের জন্য খাবার খেতে হবে
গর্ভবতী মেয়েদের মুরুব্বীদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি যে কথাটি শুনতে হয় তা হলো- ‘’শোনো, তুমি কিন্তু এখন আর একা নও, তাই তোমাকে দুজনের সমান খাবার খেতে হবে।’’ বস্তুত তারা মনে করেন গর্ভে সন্তান আসা মানেই হবু মায়ের শরীরে দু’জন মানুষের খাবারের চাহিদা তৈরি হওয়া। কিন্তু ছোট্ট ভ্রূণের এত খাবার লাগে লাগে না। মা যা খায় সেই নির্যাস সে গ্রহণ করতে পারবে। বরং গর্ভবতী মেয়েরা দুজনের সমান বা প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেলে সবটাই গিয়ে মায়ের ওজন বাড়ায়, ফলে ডায়াবিটিস, প্রেশার ও আরও কিছু জটিল বিপদের ভয় থাকে যা থেকে মা ও শিশু উভয়ের প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়তে পারে।
হ্যাঁ, এটা ঠিক যে গর্ভবতী মেয়েদের হরমোনের কারণে ক্ষুধা বেড়ে যায়। মনে রাখবেন একজন গর্ভবতী নারীর দিনে ৩০০ ক্যালরি খাবার খাওয়া যথেষ্ট৷
গর্ভবতী মা-কে কম ঘুমাতে হবে
গর্ভকালীন সময়ে শরীর বেশ ক্লান্ত থাকে। তাই আপনি যদি ভুল ধারণা মেনে এ সময় কম ঘুমান তাহলে আপনার স্বাস্থ্য ভাঙতে বাধ্য। দৈনিক অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমোন। অফিসে থাকলে দুপুরে খাওয়ার পর ১০–১৫ মিনিটের পাওয়ার ন্যাপ নিন অথবা সপ্তাহ–শেষে অনেকটা ঘুমিয়ে শরীরের ঘুম পুষিয়ে নিন। কিন্তু কোনও ভাবেই কম ঘুমের কুসংস্কারে বিশ্বাস করবেন না।
আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে
ব্যায়াম করা যাবে না
গর্ভবতী মায়েদের নয় মাস পর্যন্ত একটানা বিশ্রাম করা জরুরী, তবে ডাক্তাররা বলেন, বিশ্রামের পাশাপাশি হবু মায়েদের ছোটখাট ব্যায়াম করাও দরকার। যেমন, আপনি ঘরের মধ্যেই একটু হাঁটাহাঁটি করতে পারেন, পাশাপাশি ঘরের হালকা কাজকর্মও করতে পারবেন। হবু মায়েরা যদি হালকা ব্যায়াম করেন, তবে সেটা গর্ভের ভ্রুণের জন্যও যথেষ্ট উপকারী। এতে গর্ভবতী মায়ের শরীর চনমনে থাকে এবং রাতে ভালো ঘুম হয়। এতে যেমন তাদের প্রসব সহজ হয় তেমনই প্রসবের পর সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগে না।
ব্যায়ামের পাশাপশি ডাক্তাররা গর্ভাবস্থার তিন থেকে ছয় মাসের মাঝে ভ্রমণ করতে বলেন। কারণ এ সময়ে শারীরিক কষ্ট কম হয়, মর্নিং সিকনেস বা বমি ভাবটাও কমে আসে। তবে সবসময় মনে রাখবেন, গর্ভবতী মায়েদের অতিরিক্ত ব্যায়াম ও ঘরের ভারী কাজ করা যাবে না।
গর্ভবতী মেয়েদের যৌন সম্পর্ক করা উচিত নয়
এটাও একটা ভুল ধারণা। এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, গর্ভাবস্থায় একজন নারী যৌন মিলনের ততটাই আনন্দ নিতে পারেন, যতটা গর্ভধারণের আগে নিতে পারতেন৷ শারীরীক মিলনের ফলে বাচ্চার শরীরে কোনো খারাপ প্রভাব পড়ে না বরং প্রসব সহজ করার ক্ষেত্রে যোনির একধরনের ব্যয়াম হয় এর মাধ্যমে৷
আবার অনেকের মাঝেই আরেকটি ভুল ধারণা আছে গর্ভধারণের জন্য দিনে যত বেশিবার সহবাস করা যায় তত বেশি ভালো। তারা যুক্তি দেখান যে প্রতিবার সহবাসের মাধ্যমে ডিম্বানুর সাথে শুক্রানুর সংযুক্তির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কিন্তু আসল সত্যিটা হলো একটিমাত্র ডিম্বাণুর সাথে সহস্র শুক্রানুর যেকোনো একটির সংযুক্তি ঘটলেই গর্ভধারণ করা সম্ভব। এর সাথে দিনে একাধিক বার যৌন মিলন করার কোনো সম্পর্ক নেই।
বাচ্চা দেখতে কেমন হবে?
অনেকই ধারণা করেন ঘরের দেয়ালে সুন্দর সুন্দর বাচ্চাদের ছবি টাঙিয়ে রাখলেই সুন্দর বাচ্চার জন্ম হবে। এটি ভুল, কারণ শিশুটি দেখতে কার মতো হবে সেটা বাবা-মায়ের জিনই ঠিক করে। অনেক মুরুব্বীরা বলেন, পেটে ছেলে থাকলে মায়ের চেহারা খুব সুন্দর হয়ে যায়৷, আর যদি মেয়ে থাকে তাহলে চেহারা খুব খারাপ হয়ে যায়। তবে এ কথাগুলোর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই৷
বেশিরভাগ মানুষই গাইনি ডাক্তারের কথা অন্ধের মত বিশ্বাস করেন। সন্তান ভুমিষ্ঠ হবে নাকি হবে না সেটা গাইনি ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে একটু নিশ্চিত থাকতে চান তারা। কিন্তু আপনার গাইনি ডাক্তার আপনাকে আপনার শারীরিক সমস্যাগুলো জানিয়ে দিতে পারেন এবং সেগুলোর সমাধানের পরামর্শ দিতে পারেন। আপনার সন্তান হবে নাকি হবে না সেই নিশ্চয়তা দেয়ার ক্ষমতা তার নেই। আবার সন্তানের নড়াচড়া বা অবস্থান ইত্যাদি দেখে সে ছেলে হবে নাকি মেয়ে, তা নির্ধারণ করবেন না।
দুধ, দই, ঘি বেশী বেশী খেতে হবে
জাতিগত বৈশিষ্ট্যের কারণে আমরা বাঙালিরা ভীষণ বর্ণবাদী৷ বাচ্চা কালো হবে না ফর্সা, এটা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না। তাই গর্ভবতী মা-কে বেশী বেশী দুধ, দইয়ের মতো সাদা খাবার দেয়া হয় যাতে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়। কিন্তু এটাও নির্ভর করে জিনের উপর৷ আবার অনেকে বলেন বেশী বেশী ঘি খেলে প্রসব সহজ হবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মত, আপনি যা খাবেন তা পরিপাকতন্ত্রের মধ্য দিয়ে যাবে, প্রজনন তন্ত্রে প্রবেশ করবে না৷ বরং স্বাস্থ্যবান শিশুর কথা ভেবে প্রচু ঘি খেলে বাচ্চা হয়তো মোটা সোটা হবে, কিন্তু সেই সাথে আপনার ডায়বেটিসের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে৷
গর্ভবতী মায়ের পানি ভাঙা মানেই বিপদ
প্রসব বেদনা ওঠার আগেই গর্ভবতী মায়ের পানি ভাঙা বিপদজনক নয়, বরং সাধারণ একটি প্রক্রিয়া। তাই এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই। তবে যদি পানি ভাঙার পর সবুজ বা বাদামী তরল দেখা যায় তবে তা খারাপ লক্ষণ এবং দ্রুত গর্ভবতী কে হাসপাতালে নেওয়া উচিত।
অনিয়মিত পিরিয়ড গর্ভধারণে প্রভাব ফেলে না
গর্ভধারণের ক্ষেত্রে পিরিয়ডের সময়ের কোনো ভূমিকা নেই- এটা অনেকেই মনে করেন। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ উল্টো। যাদের পিরিয়ড প্রতিমাসের নির্দিষ্ট সময়ে হয় না এবং পুরো বছরই অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যায় ভুগেন তারা তাদের অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা বলবেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে- যাদের বছরের মাত্র কয়েকবার পিরিয়ড হয় তাদের গর্ভধারণের সম্ভাবনাও কম থাকে। এছাড়াও অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে গর্ভধারণের সম্ভাব্য সময় নির্নয় করাও বেশ কঠিন হয়ে যায়। তাই অনিয়মিত পিরিয়ডকে বহেলা না করে অবশ্যই ডাক্তারের শরনাপন্ন হওয়া উচিত। অনেক দাদী-নানীর ধারণা, মাসিকের সময় যে তীক্ষ্ণ ব্যথা অনুভূত হয়, সন্তান জন্ম দেয়ার পর তা আর থাকেনা। আসলে এই বয়সের পর থেকে এমনিতেই মাসিকের ব্যথা কমতে শুরু করে। এর সঙ্গে সন্তান জন্মদানের কোনো সম্পর্ক নেই।
সিঁড়ি ভাঙা যাবে না
গর্ভধারণ কোনো অসুখ নয় যে সারাদিন শুয়ে বসেই কাটাতে হবে৷ তাই আগে যেমন স্বাভাবিক জীবন কাটাতেন এখনও তাই করবেন। গর্ভবতী যদি নিয়মিত ব্যয়াম করে থাকেন, এক্ষেত্রে সেটা শরীরের জন্য আরো ভালো৷
নরমাল ডেলিভারী নাকি সিজার
প্রচলিত একটি ভ্রান্ত ধারণা হলো- মা ও শিশুর জন্য সিজারিয়ান বেশি নিরাপদ। সিজারিয়ানের ক্ষেত্রেই মা ও শিশুর জীবনের ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশী। সিজারের ফলে মায়ের রক্তক্ষরণ, মুত্রথলি বা অন্ত্রে ক্ষত এমনকি দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার শঙ্কা থাকে। সন্তানেরও বেশকিছু সমস্যা দেখা দেয় যেমন ফুসফুসের সমস্যা, ব্রেস্টফিডিং করতে দেরি হওয়া, পরবর্তী জীবনে ডায়াবেটিস, ওবেসিটি এবং অ্যালার্জির ঝুঁকি। প্রসবের আগে গর্ভের সন্তানের গলায় নাড়ি পেঁচিয়ে যাওয়াটাকে খারাপ লক্ষণ ধরে নেওয়া হয় এবং এমন পরিস্থিতিতে অবশ্যই সিজারিয়ান করতে হবে বলে ধরা হয়। কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই নাড়ি অনেক আলগা থাকে এবং সন্তানের তেমন ক্ষতি হয় না। এভাবে প্রাকৃতিক প্রসব করানো সম্ভব।
তবে যদি সিজার করাতেই হয় তাহলে পরে বারবার সিজার করতে হবে তাও ঠিক নয়। সিজার করার পর আবার সন্তান নিতে চাইলে নরমাল ডেলিভারিও সম্ভব। বরং এতে মা ও শিশু উভয়েই শারীরিক কিছু সুবিধা পায়।
গর্ভধারণে বয়সের কোনো প্রভাব নেই
অনেকেই বলেন, গর্ভধারণের জন্য বয়স কোনো ব্যাপার না, এটা ঠিক নয়। এটা আপনাকে মানতেই হবে যে, বয়সের সাথে সাথে ধীরে ধীড়ে গর্ভধারণের ক্ষমতা কমতে থাকে। বয়স তিরিশ পার হওয়ার পরে গর্ভধারণের ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং মা ও শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে থাকে। সেইসঙ্গে গর্ভপাত হওয়ার প্রবণতাও বৃদ্ধি পায়।
গরম পানিতে গোসল করা যাবে না
গর্ভাবস্থায় গরম পানি দিয়ে গোসল না করাই উত্তম। তবে প্রয়োজন হলে কুসুম গরম পানিতে আপনি পাঁচ থেকে ছয় মিনিট সময় নিয়ে গোসল করতেই পারেন। কিন্তু গর্ভাবস্থায় গরম পানির মধ্যে কোনো বসে থাকবেন না বা দীর্ঘ সময় ধরে গরম পানি শরীরে ঢালবেন না। মদীর্ঘ সময় ধরে গরম পানিতে গোসল করলে ও বাথ ট্যাবে বসে থাকলে আপনার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে, যা নিউরাল ডিসঅর্ডারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই হবু মায়েদের উচিৎ কুসুম গরম পানিতে অল্প সময়ের জন্য গোসল করা।
গর্ভবতী মা কফি খেতে পারবেন না
কফি থেকে গর্ভপাত, নির্ধারিত সময়ের পূর্বে জন্মদান এবং কম ওজন সম্পন্ন বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বলে আপনাকে সম্পূর্ণরূপে কফি বাদ দেওয়ার দরকার নেই। দিনে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি কফি না খেলেই হলো। আপনি দিনে এক কাপ কফি নিশ্চিন্তে পান করতে পারেন এবং এতে আপনার গর্ভের সন্তানের কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
পোশাক-আশাক
অনেক গর্ভবতী মা তাদের পেটিকোট বা সালোয়ারের বাঁধন পেটের উপর শক্ত করে বেঁধে রাখেন যাতে বাচ্চা উপর দিকে উঠে না যায়। প্রকৃতপক্ষে এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা। এই সময়ে শক্ত কাপড় নয় বরং মায়েদেরকে ঢিলা-ঢালা পোশাক পরার উপদেশ দেয়া হয়।
প্রচলিত কিছু কুসংস্কার
বাংলাদেশ গর্ভবতী নারীদের ডাক্তারের চেয়েও বেশি শুনতে হয় দাদি-নানি, আত্মীয় স্বজনদের কথা যেগুলোর আসলে কোনো ভিত্তি নেই৷ জেনে নিন সেগুলো-
- গর্ভবতী মায়ের শরীরে লোহার টুকরা বা লোহার কাঁটা লোহা থাকলে পেঁচা-পেঁচি শিশুকে আক্রমণ করতে পারবে না।
- বোয়াল, বাইনসহ কালো রংয়ের মাছ খেতে পারবেন না। এইসব মাছ খেলে শিশুর মুখ ওই মাছের মতো চিকন আর শরীর মোটা হবে।
- গর্ভবতী নারীক দুধ খেতে পারবেন না।
- ডাবের পানি খেলে জন্মের পর সন্তানের চোখ সাদা হবে।
- বাইরে বের হওয়ার সময় শুকনা মরিচ, লোহার টুকরা,ম্যাচের কাঠি রাখলে জ্বিন পরী কাছে আসবে না।
- সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের সময় পুরোপুরি চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতে হবে। এই সময় মা নড়াচড়া করলে বা খাবার খেলে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হবে।
- গর্ভবতী নারীর চুল ডাই করা যাবে না
গর্ভবতী মায়েরা এখনও বিভিন্ন কুসংস্কারের মুখোমুখি হচ্ছেন। তাই কুসংস্কার দূর করতে শিক্ষার লেভেল পরিবর্তন করতে হবে এবং মানসিকতা বদলাতে হবে। এরজন্য চিকিৎসককে কাউন্সেলিং করতে হবে। রোগীকেও চিকিৎসকের কথা শুনে চলতে হবে। তা না হলে গর্ভধারণের পর প্রথম যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে তা হচ্ছে গর্ভপাত। গর্ভকালীন সময়ে হবু মায়েদের করণীয় ও সতর্কতা জানতে পড়তে পারেন এই লিখাটি।
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com
top 10 pharmacies in india https://indiaph24.store/# indian pharmacy
top 10 online pharmacy in india
buying prescription drugs in mexico online: Mexican Pharmacy Online – purple pharmacy mexico price list
Thank you for your sharing. I am worried that I lack creative ideas. It is your article that makes me full of hope. Thank you. But, I have a question, can you help me?
A biofilm is an encapsulated, structured microorganism colony that has created its own polymeric matrix for both protection and adherence to bodily structures, stones, or foreign bodies priligy farmacias del ahorro
Your article helped me a lot, is there any more related content? Thanks!
Thanks for sharing. I read many of your blog posts, cool, your blog is very good. https://accounts.binance.com/en-ZA/register?ref=JHQQKNKN
Your point of view caught my eye and was very interesting. Thanks. I have a question for you. https://accounts.binance.com/ar/register-person?ref=V2H9AFPY
Your article helped me a lot, is there any more related content? Thanks!
35148 557877We will provide deal reviews, deal coaching, and follow up to ensure you win the deals you cant afford to shed. 519276
597490 506381Awesome material you fellas got these. I in fact like the theme for the web site along with how you organized a person who. It is a marvelous job For certain i will come back and have a look at you out sometime. 621578
741391 616017Hey there, Can I copy this post image and implement it on my personal web log? 71578
547924 433039Thanks for this superb. I was wondering whether you were preparing of writing similar posts to this one. .Keep up the excellent articles! 301730