3.7/5 - (7 votes)

ইসলামী শরীয়তের হুকুমগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হুকুম হচ্ছে বিবাহ। বিয়ে হলো দুইজন পূর্ণ বয়স্ক নারী এবং পুরুষের সম্মতিক্রমে উভয়ের মধ্যে সৃষ্ট একটি বৈধ সম্পর্ক। পৃথিবীতে স্বামী এবং স্ত্রীর বন্ধন শ্রেষ্ঠ বন্ধন আর এই বন্ধন অটুট রাখতে প্রত্যেকের বেশ কিছু দায়িত্ব রয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর ভালো সম্পর্ক একটি সুন্দর পরিবার গড়ে তোলে। ইসলাম প্রত্যেকের মাঝে ভালোবাসা তৈরির জন্য বেশ কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য দিয়েছে। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য ইসলামে সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।

আমরা অনেকেই জানি না, একজন স্বামীর প্রতি স্ত্রীর এবং একজন স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্য কি? এছাড়া স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের নির্দেশনাগুলোও মেনে চলি না। আমাদের আজকের পোস্টে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের অধিকার, দায়িত্ব-কর্তব্য এবং স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে ইসলামের হুকুম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে কোরআনের হুকুম কি?

স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পরিপূরক। আল্লাহ্ তায়ালা হজরত আদম (আ) কে সৃষ্টি করার পর তার নিঃসঙ্গতা দূর করা এবং মানব সৃষ্টির ক্রমধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে হজরত হাওয়া (আ) কে সৃষ্টি করেছিলেন। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে রাব্বুল আলামিন বলেন-

‘তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাকস্বরূপ।’ (সূরা বাকারা: ১৮৭)

নারী-পুরুষকে আল্লাহ্ তায়ালা পারস্পরিক ভালোবাসার মাধ্যমে একাকার করে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে

‘আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে।’ (সূরা রুম: ২১)

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যত উত্তম ও মধুর হবে, দাম্পত্য জীবনে সুখ ও শান্তি তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। স্বামী- স্ত্রী সম্পর্কে প্রেম-প্রীতি ও ভালোবাসা ছাড়া মানবজীবন সৌন্দর্য মন্ডিত হতে পারে না। মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

‘আর তোমরা তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করো। আর যদি তাকে তোমার অপছন্দও হয়, তবু তুমি যা অপছন্দ করছ, আল্লাহ তাতে সীমাহীন কল্যাণ দিয়ে দেবেন।’ (সুরা নিসা: ১৯)

স্ত্রী ও সন্তানের পূর্ণ ভরণ-পোষণ স্বামীর দায়িত্ব। তাছাড়া স্ত্রীর নিজস্ব সম্পদে হস্তক্ষেপ না করা স্বামীর অন্যতম র্কতব্য। ইসলাম নারীকে যেমন ব্যক্তি স্বাধীনতা দিয়েছে, তেমনি অর্থনৈতিক স্বাধীনতাও দিয়েছে। আল্লাহ পাক বলেছেন-

‘পুরুষগণ যা উপার্জন করে তা তাদের প্রাপ্য, আর নারীগণ যা উপার্জন করে, তা তাদের প্রাপ্য।’ (সূরা আন নিসা: ৩২)

যদি কোনো ঈমানদার ব্যক্তির একাধিক স্ত্রী থাকে, তবে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে স্ত্রীদের মধ্যে ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমতা-ভিত্তিক আচরণ করা। ইনসাফ কায়েম করার ব্যাপারে নেতিবাচক আশংকা থাকলে, সেক্ষেত্রে একজন স্ত্রী রাখাই উত্তম।

স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে হাদীস কি বলে?

স্বামীর আনুগত্য করা প্রত্যেক স্ত্রীর অবশ্য কর্তব্য। স্বামী-স্ত্রীর সুসম্পর্ক দাম্পত্য জীবনে সুখ-শান্তি লাভেই শুধু জরুরি নয় বরং পরকালের সফলতায়ও খুবই জরুরি। স্বামী-স্ত্রী একে অপরের অঙ্গস্বরূপ। সুতরাং সুখী স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে একে অপরের হকের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। স্ত্রীর ওপর স্বামীর যেসব হক রয়েছে, তার চেয়ে বেশি হক রয়েছে স্বামীর ওপর স্ত্রীর। নবী করিম (সা) বলেন-

‘যদি আমি কোনো মানুষকে অপর কারও জন্য সিজদা করার অনুমতি দিতাম, তবে নারীকে তার স্বামীকে সিজদা করতে নির্দেশ দিতাম’

স্ত্রীর সাথে ভালো ব্যবহার করা স্বামীর দায়িত্ব। বিয়ের পর স্ত্রীর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য, আরামদায়ক বাসস্থান, উপযুক্ত পোশাক এবং অনান্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা স্বামীর প্রধান কাজ। নবী করীম (সা) বলেছেন-

‘তোমরা যখন খাবে, তাদেরও খাওয়াবে; আর তোমরা যেমন পোশাক পরবে, তাদেরকেও তা পরাবে। কখনো তাদরে চেহারায় প্রহার করবে না ববেং অসদাচরণ করবে না’

পারিবারিক জীবনে সুখ, শান্তি ও কল্যাণ পেতে স্বামী-স্ত্রী স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে আন্তরিকতা ও ভালোবাসার পাশাপাশি প্রিয় নবী (সা.)-এর নির্দেশিত পথ ও পদ্ধতি অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই। রাসুল (সা.) হাদিসে বলেছেন-

’মুমিনদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই পরিপূর্ণ ঈমানদার যিনি সর্বাপেক্ষা চরিত্রবান। তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে তার স্ত্রীর কাছে সবচেয়ে ভাল’

হাদিস শরিফে আছে, রাসূল সা: ইরশাদ করেন-

‘যদি কোনো স্বামী স্ত্রীর দিকে দয়া ও ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকায়, তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার দিকে দয়া ও রহমতের দৃষ্টি নিয়ে তাকান’

কোন বিবাহিত পুরুষ তার স্ত্রীর নিকট থেকে ৪ মাসের বেশী আলাদা বা দূরে থাকতে পারবে না। হাদিসের ভাষায়, ‘হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন-

’সমগ্র পৃথিবী মানুষের ভোগ্যবস্তু, এর মধ্যে সর্বোত্তম হলো পূণ্যবতী স্ত্রী’

সর্বোপরি, একজন আদর্শ স্ত্রী স্বামীকে সন্তুষ্ট ও খুশি রাখবেন। আর এর মাধ্যমেই জান্নাত লাভের পথ সুগম করবেন। হাদিসে আছে- হজরত উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন-

’স্ত্রীর প্রতি তার স্বামী সন্তুষ্ট ও খুশি থাকা অবস্থায় কোনো স্ত্রীলোক মারা গেলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’

স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্য কি?

বিয়ের পরেই স্বামীর প্রথম দায়িত্ব হলো স্ত্রীর পূর্ণ দেনমোহর পরিশোধ করে দেওয়া। কোনো রকম সমস্যা ছাড়া মোহরানা আদায়ে কালবিলম্ব করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন-

‘আর তোমরা নারীদের সন্তুষ্টচিত্তে তাদের মোহর দিয়ে দাও’

বিয়ের আসল উদ্দেশ্য হলো, শান্তি এবং ভালোবাসা। ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক, বিয়ের পর স্বামীর ওপর স্ত্রীর জন্য যেসব অধিকার সাব্যস্ত হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো স্ত্রীর ভরণপোষণ ও পূর্ণ ব্যয়ভার গ্রহণ করা। স্ত্রীকে সবসময় সঙ্গ দেওয়া এবং তাকে মানসিক সাপোর্ট দেওয়া আদর্শ স্বামীর দায়িত্ব ও কর্তব্য। মহান আল্লাহ্ তাআলা বলেন-

‘সন্তানের পিতার ওপর সন্তানের মায়ের জন্য অন্ন-বস্ত্রের উত্তম পন্থায় ব্যবস্থা করা একান্ত দায়িত্ব’

স্ত্রীর সঙ্গে সব সময় আন্তরিক আচরণ করতে হবে। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা পারিবারিক সুখের অন্যতম চাবিকাঠি। নবীজি (সা) পরিবারের সমস্ত কাজে স্ত্রীদের সাহায্য করতেন। জীবনের যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য স্ত্রীর মতামতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) শুধু ঘরোয়া বিষয়েই নয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীদের মতামত নিতেন।

স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে স্ত্রীর সব আচরণ স্বামীর কাছে ভালো লাগবে, এটা অসম্ভব। কারণ মহান রাব্বুল আলামিন কাউকেই পূর্ণতা দান করে সৃষ্টি করেননি। ভালো ও মন্দ দুটো দিক মিলেই মানুষ। কাজেই স্ত্রীর কোনো স্বভাব স্বামীর কাছে অপছন্দ হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা এবং ধৈর্যধারণ করা উচিত। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে স্ত্রীর বিনোদনের সুযোগ করে দেয়া, তার মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ রাখা স্বামীর কাছে স্ত্রীর হক।

স্ত্রীর ভরণ-পোষণ যেমন স্বামীর দায়িত্বে, তেমনি তার মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখাও তার দায়িত্বে। আর প্রত্যক স্ত্রীই তার স্বামীর কাছে ভালোবাসা চায়। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে স্বামীর উচিত, স্ত্রীর ভালোবাসা ও তার প্রতি দয়া প্রদর্শন করা। স্ত্রীর কাজের প্রশংসা করা, তার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করা, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করা আদর্শ স্বামীর দায়িত্ব।

স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কর্তব্যগুলো কি?

ইসলাম যেমন স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্য নির্ধারণ করে দিয়েছে, তেমনি স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্ব সম্পর্কেও নির্দেশ দিয়েছে। স্ত্রীর যেমন স্বামীর উপর অধিকার রয়েছে তেমনি স্বামীরও স্ত্রীর প্রতি অধিকার রয়েছে। শরীয়ত অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে স্ত্রীর উচিত স্বামীর উপস্থিত-অনুপস্থিত সর্বাবস্থায় নিজের ইজ্জত আব্রুর হেফাজত করা। যে স্ত্রী ইসলামি শরীয়ত মেনে চলে, স্বামীর আনুগত্য করে, তার খেদমত করে এবং নিজের সতীত্ব রক্ষা করে হাদিসে পাকে তার জন্য জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

‘যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে, রমজান মাসের রোযা রাখে, লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এবং স্বামীর অনুগত থাকে; তাকে বলা হবে- তুমি যে দরজা দিয়ে চাও জান্নাতে প্রবেশ কর।’

পুরুষ হলো নারীর অভিভাবক। তাই স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর কর্তব্য। স্বামীর সঙ্গে সর্বদা হাসিমুখে কথা বলা, বিপদ-আপদের সময় স্বামীকে সান্ত্বনা মহানবী (সা) এর সুন্নত। প্রয়োজন ব্যতীত ও অনুমতি ছাড়া স্বামীর বাড়ি থেকে বের হওয়া অনুচিত। মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ নারীদের ঘরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া স্ত্রীর উচিত স্বামীর সম্পদ সংরক্ষণ করা এবং স্বামীর সাধ্যের বাইরে কোন আবদার কিংবা দাবি না করা।

স্বামীর আদেশ পালন প্রত্যেক স্ত্রীর অবশ্য কর্তব্য। যে স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করে না এবং স্বামীর প্রতি অসন্তুষ্ট থাকে তার সম্পর্কে হাদিসে কঠোরভাবে সতর্কতার কথা বলা হয়েছে। যে স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য, তার নামাজ, রোযা, তিলাওয়াত, সদকা মূলত কোন ইবাদতই কবুল হয় না। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে রাসূল (সা) বলেছেন-

‘স্বামী যখন তার প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডাকে, সে যেন অবশ্যই তার কাছে আগমন করে, যদি সে রান্নাবান্নার কাজে ব্যস্ত থাকে তবুও’

অন্য হাদিসে রাসূল (সা) বলেছেন,

‘যখন কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে তার শয্যায় ডাকে কিন্তু স্ত্রী যদি স্বামীর আহ্বানে সাড়া না দেয়, আর স্বামী যদি তার এ আচরণে কষ্ট পেয়ে তার প্রতি নারাজ অবস্থায় রাত অতিবাহিত করে, এমতাবস্থায় জান্নাতের বাসিন্দারা তাকে সকাল হওয়া পর্যন্ত লানত দিতে থাকে’

স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে ঝগড়া হলে কিভাবে সমাধান করতে হবে?

বৈবাহিক সম্পর্কে স্বামী স্ত্রীর একান্ত গোপনীয় বিষয়গুলো কারও কাছে প্রকাশ করা উচিত নয়। এ ব্যাপারে স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই খেয়াল রাখতে হবে। বৈবাহিক জীবনে দুজন মানুষ পাশাপাশি থাকলে সেখানে রাগ-অভিমান এবং সুখ-দুঃখ থাকেই, কিন্তু সেটা যেনো দাম্পত্য কলহ বা তালাকের পর্যায়ে না যায়। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে সুখের সংসারকে জান্নাতের সঙ্গে তুলনা করা হয়, অপরদিকে যে সংসারে সবসময় অশান্তি ও ঝগড়া লেগে থাকে সে পরিবারকে শুধু জাহান্নামের সঙ্গে তুলনা করা চলে।

নানাবিধ কারণে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিয়ে বর্তমান সময়ে তালাকের সংখ্যা শুধুই বেড়ে চলেছে। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব না নেওয়া, স্বামীর হাতে স্ত্রী নির্যাতন, শ্বশুর-শাশুড়ির হাতে পুত্রবধূ নির্যাতন, পরকীয়ায় আসক্তি, স্বামীর মাদকাসক্তি এসবই ডিভোর্সের মূল কারণ। এছাড়া পরস্পরকে ছাড় না দেওয়ার মনোভাব, অতিরিক্ত রাগ, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া, অবিশ্বাস, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে না ভাবা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তালাক হয়ে থাকে। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে ঝগড়া হলে তার প্রতিকারের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, বিবেক ও বুদ্ধি দিয়ে পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়া।

স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে ঝগড়া হলে ইসলামি শরিয়তের নির্দেশ হলো উপদেশ ও দিক-নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের ভুল-ত্রুটিগলো ধরিয়ে দেওয়া, বুদ্ধিমত্তা ও ধৈর্যের পথে চলার জন্য উৎসাহ প্রদান এবং পরকালের কথা মনে করিয়ে দেওয়া। নিজেরা আলোচনা করে সমস্যার সমাধান না হলে অভিভাবকদের দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। তালাকের হুমকি দেওয়া বা তালাক দেওয়া এগুলো কখনোই স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে ঝগড়ার সমাধান নয়।

স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে মহান আল্লাহ্‌ তাআলার নির্দেশ হচ্ছে-

‘তোমরা যাকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নিলে, যাকে নিয়ে ঘর বাঁধলে, তার প্রতি সবসময়ই খুব ভাল ব্যবহার করবে, তার অধিকার পূর্ণ মাত্রায় আদায় করবে’

ঝগড়া হলে স্ত্রীর গায় হাত তোলা যাবে না। অন্যদিকে স্ত্রীদেরকেও স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। নবী করীম সা. বলেন-

‘তোমাদের কেউ যেন তার স্ত্রীকে ক্রীতদাসদের মত না মারে’

রাসূলুল্লাহ (সা.) মেরাজ থেকে ফিরে এসে বলেন-

‘আমি জাহান্নাম কয়েকবার দেখেছি, কিন্তু আজকের মতো ভয়ানক দৃশ্য আর কোনো দিন দেখিনি। তার মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি দেখেছি। কারণ তারা স্বামীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না’

স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে শেষ কথা

স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন সুখের করতে অবশ্যই একে অপরের প্রতি ভালোবাসা সহানুভূতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ খুবই প্রয়োজন। এভাবে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে মহান আল্লাহ্‌র হুকুম মেনে চলে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানে কামিয়াব হওয়া যাবে। মহান রাব্বুল আলামিন মুসলিম উম্মাহর সকল স্বামী-স্ত্রীকে কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন।

বিয়ে সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য, সেবা, এবং পরামর্শ পেতে যোগাযোগ করুন তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়ার সাথে।
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com

88 COMMENTS

  1. Selective reactivation of human herpesvirus 6 in patients with autoimmune connective tissue diseases priligy ebay However, individual batches from individual manufacturers have been recalled because of manufacturing irregularities

  2. The entire success of the NC- FET cycle depends on the correct identification of ovulation and calculation of the likely subsequent period of optimal endometrial receptivity 138, 139 buy priligy Morbidity following prolonged postoperative hypotony after trabeculectomy

  3. Hi, I do think this is a great blog. I stumbledupon it I’m going to return yet again since I book-marked it. Money and freedom is the best way to change, may you be rich and continue to guide others.

  4. I’m curious to find out what blog platform you’re working with? I’m having some small security problems with my latest blog and I would like to find something more risk-free. Do you have any recommendations?

  5. What’s Happening i’m new to this, I stumbled upon this I have found It absolutely helpful and it has aided me out loads. I hope to contribute & help other users like its helped me. Great job.

  6. Thank you a bunch for sharing this with all of us you really know what you’re speaking about! Bookmarked. Kindly additionally consult with my web site =). We can have a hyperlink alternate arrangement between us!

  7. Hi, i believe that i noticed you visited my web site so i got here to “return the choose”.I’m attempting to in finding issues to improve my website!I guess its ok to use some of your ideas!!

  8. We are a gaggle of volunteers and opening a brand new scheme in our community. Your web site offered us with helpful information to paintings on. You’ve performed an impressive job and our whole neighborhood can be thankful to you.

  9. Hmm it looks like your website ate my first comment (it was extremely long) so I guess I’ll just sum it up what I submitted and say, I’m thoroughly enjoying your blog. I as well am an aspiring blog blogger but I’m still new to the whole thing. Do you have any recommendations for novice blog writers? I’d definitely appreciate it.

  10. It’s a pity you don’t have a donate button! I’d most certainly donate to this outstanding blog! I guess for now i’ll settle for book-marking and adding your RSS feed to my Google account. I look forward to fresh updates and will talk about this website with my Facebook group. Chat soon!

  11. Unquestionably believe that which you said. Your favorite justification seemed to be on the net the simplest thing to be aware of. I say to you, I definitely get annoyed while people consider worries that they plainly don’t know about. You managed to hit the nail upon the top as well as defined out the whole thing without having side effect , people could take a signal. Will likely be back to get more. Thanks

  12. Hi there, just became aware of your blog through Google, and found that it is truly informative. I am going to watch out for brussels. I will appreciate if you continue this in future. Numerous people will be benefited from your writing. Cheers!

  13. Hi there! This is my first visit to your blog! We are a team of volunteers and starting a new project in a community in the same niche. Your blog provided us beneficial information to work on. You have done a marvellous job!

  14. it’s really nice together with meanful. it’s really amazing blog. Connecting is really useful matter. you have seriously assisted lots of people who also visit blog plus give them usefull data.

  15. Если интересна тематика про “Яндекс”, то рекомендуем посмотреть раздел – все про Яндекс.- With regards, Derrick

  16. Если интересна тематика про “Красоты”, то рекомендуем посмотреть раздел – все про Красоты.- With regards, Ismael

  17. Article writing is also a excitement, if you be acquainted with then you can write otherwise it is complicated to write.Also visit my blog post – slot deposit pulsa

  18. A motivating discussion is worth comment. I do think that you should write more on this issue, it might not be a taboo matter but typically people do not speak about such issues. To the next! Many thanks!!

  19. What’s Happening i am new to this, I stumbled upon this I’ve discovered It positively helpful and ithas aided me out loads. I am hoping to give a contribution &help different users like its aided me. Good job.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here