শুরু হয়েছে মুসলিমদের সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। এবারের রোজা শুরু হয়েছে বৈশাখ মাসে। বাইরে যেমন রোদ তেমনই ভ্যাপসা গরম। এই গরমে আমাদের প্রায় ১৪-১৫ ঘণ্টা রোজা রাখতে হচ্ছে। তার উপরে আবার এখন প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের আবহ। তাই সব মিলিয়ে নিজের শরীরের খেয়াল রাখতে হবে নিজেকেই। রমজান মাসে খাবারের ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকলে শরীর ভালো থাকবে আর সুন্দরভাবে পুরো মাস সিয়াম সাধনা করতে পারবেন।
পবিত্র রমজান মাস সিয়াম সাধনার মাস হলেও এ মাসেই ইফতার ও সেহরীতে খাবারের মহোৎসব শুরু হয়। কে কত আইটেম রান্না করতে পারে বা কে কত খেতে পারে তার একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। তবে সংযমের এই মাসে খাওয়া থেকে শুরু করে ব্যায়াম, জীবনযাত্রা সবই হতে হবে নিয়ম মত, সাধারণ, এবং পরিমিত। সারাদিন রোজা রাখার পর ভাজাপোড়া ও ভারী খাবার খেলে পেটের সমস্যা, বদহজম, মাথাব্যথা, অবসাদ ও অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। তাই পুরো রোজার মাস ভালো থাকার জন্য দরকার একটা ব্যালেন্স ডায়েট।
মহান আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন-
মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য, কিন্তু রোজা কেবল আমারই জন্য, আমিই নিজেই এর প্রতিদান দেবো। (বোখারি)
ভারসাম্যপূর্ণ ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে রোজায় থাকা যাবে সুস্থ ও সতেজ। তাই আজকে জেনে নিন রমজান মাসে সারাদিন রোজা রেখে সেহরি ও ইফতারে কি কি খাবেন আর কি খাবেন না?
রমজান মাসে ইফতারে কি কি খাবেন?
গরমে প্রায় ১৪ ঘণ্টা রোজা রাখার পর ইফতারেরে আইটেম এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে তা যেন স্বাস্থ্যসম্মত এবং পরিবারের সবার উপযোগী হয়। সারাদিন রোজা রেখে আমরা সবাই ভাজাপোড়া খেতে চাই। তবে প্রতিদিন ভাজাপোড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ইফতারে খেতে হবে এমন খাবার যা এই প্রচন্ড গরম ও করোনার সময় দেহ সুস্থ রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াবে।
আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে
প্রচুর পানি পান করুন
রমজান মাসে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সবরকম পানাহার নিষিদ্ধ। সারাদিন কিছু না খাওয়ার ফলে শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। তার ওপর গরম আবহাওয়া হলে তো কথাই নেই। গরম আবহাওয়ায় শরীরে ফ্লুইডের অভাবে ডিহাইড্রেশন, মাথা ব্যথা, হজমের সমস্যা, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি করে। এজন্য ইফতার ও সেহরির মাঝে প্রচুর পানি পান করতে হবে। ইফতার ও সেহরীর মাঝখানের সময়টায় কমপক্ষে তিন লিটার পানি পান করতে হবে।
কোমল পানীয়
রমজান মাসে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত এত অল্প সময়ে খুব বেশী পানি পান করা যায় না। কারণ অল্প সময়ে একসাথে বেশী পানি খেলে শরীরে দেখা দেয় সমস্যা। এজন্য ইফতারে কোমল পানীয় হিসেবে লেবুর শরবত, লাবাং, ডাবের পানি, লাচ্ছি, তোকমার শরবত, ইসুবগুলের ভুসির শরবত ও তাজা ফলের রসের মতো বেশ কয়েকধরনের পানীয় অবশ্যই রাখবেন আপনার খাদ্য তালিকায়। এছাড়া রমজান মাসে বেশী বেশী তরল খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।
একগ্লাস খেজুরের স্মুদি বা বা ইসুপগুলের ভুসি ইফতারের খাওয়া মাত্রই সারাদিনের ক্লান্তি দূর হবে সহজেই। ইফতারে বাইরে থেকে না কিনে ঘরে বানানো শরবত পান করতে পারেন। যেমন কলা, বাঙ্গি, আনারস, পেঁপে ইত্যাদির শরবত। এছাড়া ইফতারের সময় ভিজানো চিড়ার সঙ্গে আখের গুড় খেতে পারেন।
পুষ্টিকর ফলমূল খাবেন
সারাদিন না খেয়ে থাকার কারণে রমজান মাসে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে এনার্জির ঘাটতি দেখা দেয়। এজন্য ফল খেয়ে রোজা ভাঙার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। একটু পানি বা ফলের শরবত খেয়ে খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা সবচেয়ে ভালো। এছাড়া কয়েকটি কাঠবাদাম খেয়েও রোজা ভাঙতে পারেন। খেজুর বা বাদাম খিদে মেটায়, এমনকি সারাদিনের ক্লান্তিও দূর করে।
আমাদের প্রিয় নবী মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন, যদি খেজুর না পাওয়া যেত তবে শুকনো খেজুর দিয়ে অথবা কিছুটা পানি খেয়ে নিতেন।
ইফতারের তাজা ফল বেশি খেতে হবে। পুষ্টিকর ফলমূল হিসেবে শসা, টমেটো, তরমুজ, বাঙ্গি, আঙুর অথবা আপেলের মতো ফল খেতে হবে। গরমের বাজারে এখন আম, লিচু, পেয়ারা, আনারসসহ রসালো ফল পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বরফ দেওয়া তরমুজের শরবতও খেতে পারেন। পানিশূন্যতা ও দুর্বলতা দূর করতে কলার বিকল্প নেই। ইফতারে একটা কলা খেয়ে নিলে যেমন শক্তি পাওয়া যাবে তেমনি শরীরের পানির চাহিদা পূরণ হবে। ইফতারে বাঙ্গি বা বাঙ্গির জুস স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি।
ইফতারের অন্যান্য আইটেম
ইফতারে দই-চিড়া, টক দই, লাচ্ছি, দই দিয়ে ফলের স্মুদি, বিভিন্ন ধরনের ডের্জাট খেতে পারেন। বেশী মসলাদার ও ভাজা খাবার না খেয়ে যদি হালকা স্যুপ আর সালাদ মেন্যুতে রাখা যায় তবে খুবই ভালো হয়। নরমাল পাকের খিচুড়ি অথবা ভাপে বানানো কোনো পিঠাও খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া সবজি দিয়ে লাল আটার রুটি খেতে পারেন। প্রোটিনের পরিমাণ ঠিক রাখতে ইফতার আইটেমে মাছ-মাংস রাখতে হবে। ভাত, পাস্তা বা আলুর তৈরি কিছু খাবার থাকলে ভালো, সেই সাথে মাংস, মুরগি বা মাসের তৈরি কিছু খাবার রাখতে পারেন। মাঝে মধ্যে বাসায় বানানো মানসম্পন্ন হালিম খেতে পারেন।
স্বাস্থ্যসম্মত শাক-সবজি
ইফতারে পালং, লেটুস অথবা বিটের রস খেতে পারেন। সবুজ সবজিতে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে যা নিমেষে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে। বিটা ক্যারোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন গাজর, মিষ্টিআলু, ডাল, গমজাতীয় খাবার, ওটস ইত্যাদি স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার আইটেমে থাকা জরুরী।
সারাদিন রোজা রাখার পর শরীরের ক্লান্তি কাটাতে কিছুটা রুচিকর খাবারের দরকার, এজন্য ভাজাপোড়া খাবারের পরিবর্তে গ্রিলড, বেকড বা স্টিমযুক্ত খাবার খেতে পারেন। ইফতারের সময় একসঙ্গে বেশি খাবার খাবেন না। প্রয়োজনে অল্প করে কয়েকবার খান এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
রমজান মাসে রাতের খাবার
অনেকেই ইফতারের পর রাতের খাবার খান। ইফতারের পর রাতের খাবারটাও কিছুটা হালকা রাখা উচিত যেমন, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, পটল, ঝিঙে, কচুশাক ইত্যাদির তরকারি। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার ২ থেকে ৩ ঘণ্টা আগে রাতের খেয়ে ফেলা ভালো।
রমজান মাসে স্বাস্থ্যকর সেহরী আইটেম
রমজান মাসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে সেহরি। রোজা রাখতে চাইলে সেহরির খাবারে কিছুটা নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সারাদিন খেতে পারবেন না বলে সেহরীতে ইচ্ছেমত খাবেন তা কিন্তু নয়। কেননা সেহরির খাবারের উপরেই নির্ভর করবে আপনার সারাদিনের সুস্থতা। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) এর নির্দেশনা অনুযায়ী, সেহরী খাওয়া কর্তব্য এবং সেহরী না খেয়ে রোজা রাখা স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ।
সেহরিতে বেশী খেয়ে ফেললে সারাদিন অস্বস্তি, পেট ফাপা, বমি বমি ভাবসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য খুব বেশি পরিমাণে না খেয়ে সাহরিতে রুচি অনুসারে স্বাভাবিক খাবার খাবেন। সেহরিতে ভাত, রুটি, দুধ-চিড়া, মুড়ি বা ভাত-মাছ-সবজি খাওয়া যেতে পারে। সেহরির খাবার হতে হবে কম মসলাযুক্ত ও সহপাচ্য। যারা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করেন তারা সাহরিতে দুধে তৈরি করা খাবার কিংবা দুধের সাথে ফল মিশিয়ে খেতে পারেন।
শরীরে প্রোটিনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য আয়োডিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ফল, সবজি সেদ্ধ, সবজির সালাদ, মাছ বা মুরগির মাংস অথবা ডিম ও ডাল খেতে হবে। সেহরি শেষ করে সম্ভব হলে ৩-৪ চামচ ইসবগুলের ভুষি দিয়ে এক গ্লাস শরবত গুলে খেতে পারেন। একদিক দিয়ে দিনের বেলায় পানি শূন্যতা কমাবে অন্যদিকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্যও এইটা উপকারি।
রমজানে অসুস্থ রোগীদের জন্য ডায়েট চার্ট
রোজায় সবচেয়ে বেশী সমস্যায় পড়েন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা। ডায়বেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অবশ্যেই মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। শরবতের পরিবর্তে ডাবের পানি তাদের জন্য উপযোগী। চিনির পরিবর্তে জিরোক্যাল দিয়ে শরবত, জুস, চিড়া খেতে পারেন। সেহরি ও রাতে ভাত, রুটি, সবজি ও সালাদের পরিমাণ বেশি রাখুন। ডায়বেটিস রোগীদের খেজুর, পেঁয়াজু, আলুর চপ বা বেগুনিও কম খাওয়া উচিত। মনে রাখবেন, রোজায় কম খেলে কিন্তু ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে শর্করা কমে হাইপো অথবা বেশি খেলে শর্করা অতিরিক্ত বেড়ে হাইপারগ্লাইসেমিয়া হতে পারে, সুতরাং সাবধান!
যাদের ডায়াবেটিস গুরুতর এবং কিডনিতে সমস্যা রয়েছে তাদের রোজার আগেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। মাঝে মধ্যে রক্তের গ্লুকোজ মেপে দেখতে হবে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ মেপে দেখা প্রয়োজন। প্রয়োজনে ওষুধ খেতে হবে। ডায়াবেটিস রোগী যারা ইনসুলিন নেন, তাদের ইনসুলিন দিয়ে তারপর ইফতার করা উচিত।
রমজানে যে খাবারগুলো একদমই খাবেন না
ইফতার বা সেহরীতে সেহরিতে বেশী তেলযুক্ত খাবার যেমন পোলাও, বিরিয়ানি, তেহারী ইত্যাদি খাবেন না। এতে বারবার গলা শুকিয়ে পানি পিপাসা লাগাসহ নানান ধরণের সমস্যা দেখা দেবে। এছাড়া কোল্ড ড্রিংকস খাবেন না কারণ কোল্ড ড্রিঙ্কস দেহকে পানিশুন্য করে ফেলে। ইফতারের তেলে ভাজা খাবার যেমন পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, চিকেন ফ্রাই, জিলাপি ইত্যাদি বাদ দেয়াই উচিত। তেলে ভাজা খাবার ক্ষুধা কমায় এবং গ্যাসট্রিকের সমস্যা বাড়ায়।
অনেকেরই ইফতার বা সেহরীতে চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে। কিন্তু এগুলোতে থাকা ক্যাফেইন মূত্রের পরিমাণ বাড়ায়। চা-কফি শরীরকে ডিহাইড্রেট করে দেয়। ফলে শরীর থেকে পানি ও মিনারেল বের হয়ে তৃষ্ণা বেড়ে যায়। যদি চা খাওয়ার বেশি অভ্যাস থাকে তাহলে পাতলা বা কম লিকারের চা সামান্য লেবুর রস দিয়ে খেতে পারেন।
রমজান মাসে ওজন কমানোর টিপস
প্রতিদিন কিছু ছোটখাটো নিয়ম মেনে চলে রোজায় আপনি ফিজিক্যালি ও মেন্টালি ফিট থাকতে পারবেন। এজন্য বাসা বা অফিসের কাজের মাঝে মাঝে ছোট্ট বিরতি নিয়ে পায়চারি করে আসুন। রমজান মাসে সারাদিন শুয়ে-বসে থাকবেন না। প্রতিদিন অন্তত ২০-৩০ মিনিট হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন। এতে শরীর ভাল থাকবে, ওজনও বাড়বে না। রমজান মাসে দিনের বেলা কড়া রোদের নিচে ঘোরাফেরা করাটা ঠিক নয়। গরম থেকে বাঁচার জন্য হালকা সুতির কাপড় পরুন। বাইরে গেলে স্কার্ফ অথবা হ্যাট দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন।
অনেকেই আছেন, যারা সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে ইফতার থেকে সাহরির সময় পর্যন্ত এটা-সেটা খেতেই থাকেন। এমনটা করবেন না। আবার সারাদিন রোজা রাখার পর একসাথে সব খাবেন না। ধীরে সুস্থে খাবার খেতে হবে।
খাবার হজমে পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত দরকার। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন ৫-৭ ঘণ্টা টানা ঘুম প্রয়োজন। অনেকেই রাতে না ঘুমিয়ে একবারে সেহরির পরে ঘুমাতে যান। এ গরমে রোজা রেখে কম ঘুমালে হিট স্ট্রেস দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। দিনের বেলা যেহেতু রোজা রাখা হয় তাই রাতে বিশ্রাম নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আবার আবার বেশী ঘুমও শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
দেখা যায়, রোজায় অনেকের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়, আবার অনেকে নিয়েমের বাইরে প্রচুর খাওয়ার ফলে শরীর ভালোর থেকে খারাপই হয় বেশি। তাই এই মাসে সবকিছুর মত খাওয়া দাওয়ার বেলায়ও সংযম পালন করতে হবে। সংযম ও ত্যাগের মাস এই রমজান হোক পুণ্যময় এবং সকলের শরীর এবং মন থাকুক সুস্থ ও সুন্দর। সবাইকে রমজানুল মোবারক!
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com
[…] ও ইফতারে কি কি খাবেন তা জানতে আমাদের আগের আর্টিকেলটি […]
pharmacy website india https://indiaph24.store/# reputable indian online pharmacy
mail order pharmacy india
mexican border pharmacies shipping to usa: mexican online pharmacies prescription drugs – mexico pharmacy
purple pharmacy mexico price list: Mexican Pharmacy Online – mexican border pharmacies shipping to usa
india online pharmacy http://indiaph24.store/# п»їlegitimate online pharmacies india
indian pharmacies safe
Can you be more specific about the content of your article? After reading it, I still have some doubts. Hope you can help me.
Your point of view caught my eye and was very interesting. Thanks. I have a question for you.
Thanks a lot, A good amount of info!
casino online testsieger https://mapcasino.info/real-money-keno/ casino slot games free play online
You actually mentioned it wonderfully.
hack slot casino online https://combatcasino.info/crash-gambling/ vegas casino online no deposit bonus codes 2023 usa
Regards. Ample information.
online casinos in sweden https://combatcasino.info/no-deposit-bonus-casinos/ slots casino online gratis
Your point of view caught my eye and was very interesting. Thanks. I have a question for you.
Díky moc!|Hej, jeg synes, dette er en fremragende blog. Jeg snublede over det;
Amazing blog! Is your theme custom made or did you download it from somewhere? A design like yours with a few simple adjustements would really make my blog shine. Please let me know where you got your theme. Cheers
Kender du nogen metoder, der kan hjælpe med at forhindre, at indholdet bliver stjålet? Det ville jeg sætte stor pris på.
Audio started playing anytime I opened this site, so annoying!
I’d forever want to be update on new posts on this internet site, saved to bookmarks! .
You have made some good points there. I checked on the web for additional information about the issue and found most individuals will go along with your views on this site.
What are some recommended beverages to include in iftar to prevent dehydration during Ramadan? Universitas Telkom
nenarazili jste někdy na problémy s plagorismem nebo porušováním autorských práv? Moje webové stránky mají spoustu unikátního obsahu, který jsem vytvořil.
เสื้อลายดอก เสื้อฮาวาย เสื้อสงกรานต์ เสื้อเที่ยวทะเล เสื้อใส่ทำบุญเสื้อคู่ เสื้อทีม เสื้อบริษัท เสื้อปาร์ตี้ ใส่ได้ทั้งผู้ชาย และ ผู้หญิง สีสันสดใส ใส่สบาย มีหลากหลาย สไตล์ สี และ ลวดลายให้เลือกสรร ใส่ได้หลากหลายโอกาสเช่น เที่ยวทะเลทำบุญ สรงน้ำพระพุทธรูปที่บ้าน รดน้ำดำหัวผู้ใหญ่ในบ้าน อีกทั้งเป็น เสื้อรุ่น เสื้อกิจกรรม เสื้อกลุ่ม เสื้อรับน้อง เสื้อใส่เที่ยวทะเล เสื้อใส่ทำบุญ เสื้อฮาวายลายดอก เสื้อฮาวายวินเทจเสื้อลายดอกพิมพ์ลายดอกไม้เรโทรสไตล์วินเทจ ดีไซน์ทันสมัย เนื้อผ้าเบาบางพร้อมกับให้ความรู้สึกเย็นขณะสวมใส่เหมาะสำหรับการ ทุกฤดูกาล
This GT-styled muscle automobile was not as well-known as others in the late 1960s.
Can you be more specific about the content of your article? After reading it, I still have some doubts. Hope you can help me.
Introducing to you the most prestigious online entertainment address today. Visit now to experience now!
værdsætter dit indhold. Lad mig venligst vide det.
This is the perfect site for anybody who really wants to understand this topic. You realize so much its almost hard to argue with you (not that I personally would want to…HaHa). You certainly put a fresh spin on a subject which has been written about for a long time. Excellent stuff, just excellent.