ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে মহামারি করোনা ভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভ। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই নতুন করে আবার থাবা বসিয়েছে নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)। প্রতিদিনই লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল আর হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। কয়েকমাস আগেও সবকিছু ঠিকঠাক চললেও সংক্রমণ থেকে বাঁচতে নতুন করে আবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জারি করা হয়েছে লকডাউন। লকডাউনে গৃহবন্দী থাকার কারণে একদিকে যেমন বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি তেমনই বাড়ছে ডিভোর্স। দাম্পত্য কলহে শুধু নারীরাই নয়, প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছে বাড়ির ছোটরাও।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণকালে লকডাউনে সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। যার ফলে করোনা ভাইরাস সংকটের প্রভাব পড়েছে দাম্পত্য জীবনে। আগে হয়ত চাকরীর কারণে স্বামী অথবা স্ত্রী কিংবা দুজনকেই বাসার বাইরে থাকতে হতো। একজন আরেকজনের সাথে দেখা হতো রাতে। কিন্তু লকডাউনে স্বামী-স্ত্রীকে একই সাথে রাত-দিন চব্বিশ ঘণ্টা একই ছাদের নিচে থাকতে হচ্ছে। এই বিষয় অনেক দম্পতির জন্য আনন্দদায়ক বিষয় হলেও, সব দম্পতিদের জন্য নয় বরং চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয় হিসেবে ধরা দেয়। আর দীর্ঘদিন ঘরে বন্দি জীবন কাটাতে গিয়ে অনেকেই পারিবারিক কলহে জড়িয়েছেন আবার কারো ভাঙা সম্পর্কে জোড়া লেগেছে।
লকডাউনে বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি ও ডিভোর্স
অনেকেই বলেন, লং ডিসট্যান্সের চেয়ে একসাথে থাকাটাই দাম্পত্য সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখে। কিন্তু এ ধারণাকে উল্টো প্রমাণ করেছে চলমান লকডাউন। লকডাউনের ফলে দাম্পত্য কলহের হার দিন দিন বাড়ছে। করোনা কালীন সময়ে লকডাউনে মানুষ গৃহবন্দী থেকে নিজেদের ভবিষ্যৎ ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ায় বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি ও ডিভোর্স। বাড়িতে একরকম গৃহবন্দি পরিস্থিতিতে যে শুধু নারীরাই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তা নয়, পুরুষরাও একইভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে অনেকে জরুরি হেল্পলাইন নম্বরগুলোতে ফোনও করছেন।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে গত তিন মাসের লকডাউনে পারিবারিক সহিংসতা ২০ শতাংশ বেড়েছে। আর এই বছরে বিশ্বে অন্তত দেড় কোটি পারিবারিক কলহের ঘটনা ঘটতে পারে বলে তারা জানিয়েছেন। একটি গবেষণা বলছে, প্রতিমাসে পুরো পৃথিবীতে ডিভোর্স হচ্ছে ৮৪৩ টিরও বেশি পরিবারের। ডিভোর্স দেওয়াতে এগিয়ে রয়েছেন নারীরাই। গবেষণা অনুযায়ী, তালাক নোটিশ প্রেরণকারীদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী।
আদর্শ জীবনসঙ্গী খুঁজতে
যুক্তরাজ্যের জাতীয় হেল্পলাইনে গত দুইমাসে পারিবারিক সহিংসতা সংক্রান্ত কল এসেছে স্বাভাবিকের চাইতে প্রায় ৫০% বেশি। পারিবারিক কলহের জেরে দেশটিতে খুনের সংখ্যাও দ্বিগুণ হয়েছে। এছাড়া ফ্রান্সে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে ৩৬%, অস্ট্রেলিয়ায় ২০%, ভারতে বেড়েছে দ্বিগুণ এবং তিউনিশিয়ায় বেড়েছে প্রায় ৫ গুণ।
অনেকেই আছেন যারা স্বামী-স্ত্রী উভয়ে চাকরি করেন, লকডাউনে এখন সবসময় বাড়িতেই একসাথে থাকছেন। যদি কোনও কারণে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য আগে থেকেই থাকে সেই অশান্তি এখন আরও বেড়ে যাচ্ছে। খুবই তুচ্ছ কিছু ঘটনা যেমন টিভি দেখা কিংবা গান শোনা নিয়ে অশান্তি, স্যোশাল মিডিয়াতে বেশিক্ষণ সময় দেয়া নিয়েও স্বামী সঙ্গে স্ত্রীর অশান্তি লেগে যাচ্ছে।
আমাদের দেশে যেহেতু বেশীরভাগ নারীরাই হাউজওয়াইফ, সেক্ষেত্রে সবসময় ঘরে থাকাটা তার ওপর সেভাবে চাপ না ফেললেও, তার চাকুরিজীবী স্বামীর কাছে সারাক্ষণ বাড়িতে বসে থাকা অনেক বেশি হতাশার জন্ম দিচ্ছে। এবার সেই হতাশা অনেক সময় রাগে পরিণত হচ্ছে, আর হতাশা প্রকাশের জায়গা হচ্ছে স্ত্রী বা পরিবার। পরিবারের কেউ হচ্ছেন চাকরিহারা, তার উপর রয়েছে সংসার চালানো এবং সন্তানদের দেখাশোনার ভার। সবকিছু মিলে জীবনে জমে উঠছে মান-অভিমান আর তারই ফলাফল ডিভোর্স!
লকডাউনে আছে কিছু ভালো খবরও
করোনা এর সময়ে লকডাউনে শুরুতে মনে হয়েছিলো, দীর্ঘ সময় গৃহবন্দী থাকলে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ক্লান্ত হয়ে যাবেন, দুজনের মধ্যেই তিক্ততা তৈরী হবে। কিন্তু আসলেই লকডাউনে কি শুধুই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বেড়েছে? নাহ্, এর মধ্যে আছে কিছু ভালো খবরও। লকডাউন যেদিন থেকে শুরু হয়েছে, সেদিন থেকেই শুরু হয়েছে গৃহবন্দী জীবন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকছেন। তাতে দুজনের মধ্যে নতুন করে ভালোবাসা ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
বেশ কয়েকটি সংস্থার মতে, যে সম্পর্কগুলোতে অনেক দিন আগে থেকে ডিভোর্সের কথা-বার্তা চলছে, লকডাউনে সেই সম্পর্কগুলো এখন দীর্ঘ সময় একসঙ্গে থাকার ফলে পুনরায় জোড়া লাগছে। অনেকেই আগে ডিভোর্স কেস ফাইল করলেও, এখন সেগুলো তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করছেন। স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে ঘরের কাজ করেছেন, রান্না করেছেন আবার ছেলেমেয়েদের অনলাইন পড়াশোনার দায়িত্বও ভাগ করে নিয়েছেন। এত কাজ একসঙ্গে করতে গিয়েই আরও গভীর হয়েছে পারিবারিক বন্ধন।
মানুষের বাড়িতে থাকার সময় বেড়ে যাওয়ার কারণে স্বামী-স্ত্রীর শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার বাসনা বেড়েছে। যার ফলে গর্ভধারণের সংখ্যা বাড়ছে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাকালে লকডাউনে ঘরে থাকার কারণে স্বামী-স্ত্রী উভয়েই দীর্ঘদিন পর বেশি সময় নিয়ে নিজেদের বিষয়ে চর্চা করতে পারছেনা। এতে করে নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি কমে আসছে। নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।
কর্মব্যস্ত জীবনে নারী-পুরুষের অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর সুযোগের বড় অভাব ছিলো। কিন্তু লকডাউনে স্বামী-স্ত্রীর জন্য অন্তরঙ্গ হওয়ার অফুরন্ত সুযোগ নিয়ে এসেছে। করোনা ভীতির কারণেও যে মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে, তা থেকে মুক্তি পেতেও অনেকে যৌনতার আশ্রয় নিচ্ছেন। পরিবারের স্বামী-স্ত্রী-সন্তান একসঙ্গে সময় কাটাতে পারছে আগের চেয়ে বেশি। এতে ছোট-খাটো বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য বা ভুল বোঝাবুঝি কমে আসছে। সহনশীলতা ও আন্তরিকতা বেড়েছে।
লকডাউনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ভালো রাখবেন কিভাবে?
কোন দম্পতিই চান না যে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হোক। এ কারণে এই লকডাউনে সম্পর্কটা সুস্থ করে তুলতে হলে ডিভোর্স হওয়ার আগেই কিছু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করুন!
পরস্পরকে স্পেস দিন
সবসময় একসাথে থাকতে হচ্ছে বলে স্বামী-স্ত্রী দুজনে সারাক্ষণ আঠার মতো লেগে থাকবেন না। দুজন দুজনকেই যথেষ্ট স্পেস দিন। মাঝে মধ্যে হাপিয়ে উঠলে বই পড়ুন, ইন্টারনেটে সময় কাটান, মুভি দেখুন বা সাজগোজে সময় দিন। একজন আরেকজনকে যদি অসহ্য লাগে তাহলে খোলামেলা কথা বলুন। একটু একইভাবে নিজের আচরণগুলো সম্পর্কেও সতর্ক হোন। আবার স্পেস দেয়া মানেই যে স্ত্রীর সাথে কথা-বার্তা একেবারে বন্ধ করে দেওয়া তা কিন্তু নয়। দিনের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট সময় স্ত্রীর সঙ্গে বসে গল্প করতে পারেন।
লকডাউনে ঘরের কাজগুলো ভাগ করে নিন
সংসারের সব কাজের দায়িত্ব নিজের উপর নেবেন না। করোনা এর এই সময় হয়ত অনেক স্বামী-স্ত্রীকে অফিসের কাজগুলো বাসায় বসে করতে হচ্ছে। এরপরও লকডাউনে দুজনের হাতেই পর্যাপ্ত সময় থাকার কথা। কাজেই দু’জনে মিলে বাসার সবগুলো কাজ ভাগ করে নিন এবং একে অপরকে সাহায্য করুন। রান্নাঘরের কাজ, ঘর পরিস্কার করা, বাসনকোসন পরিষ্কার করার মতো কাজগুলো যদি দু’জনে মিলে একসঙ্গে করেন, তাহলে একজনের উপর থেকে চাপ কমবে, দুজনের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে, লকডাউনের সময়টাও অনেক বেশি উপভোগ্য হয়ে উঠবে।
লকডাউনে একসঙ্গে রান্না করুন
করোনার এই সময়ে লকডাউনে ঘরে থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রেম-ভালোবাসা বৃদ্ধি করার আরেকটি সহজ উপায় হল একসাথে রান্না করা। এই সময়ে আপনারা একে অপরের পছন্দের খাবার রান্না করতে পারেন। আবার রান্না করার সময়ও একে অপরকে সাহায্য করুন। করোনা শুরুর আগে হয়ত দুজনেই চাকরি করতেন, প্রায়ই হয়তো রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার এনে খেতে হতো। লকডাউনে এই সময়ে ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ার সুযোগ এসেছে। স্বাস্থ্যকর এই সুযোগটাকে কাজে লাগান।
দরকার শারিরীক ঘনিষ্ঠতা
সারাদিন অফিস আর ঘরের কাজ করে সময় কাটলেও যৌনতাকে অবহেলা করবেন না। লকডাউনে এখন হাতে আছে প্রচুর সময়। যৌন মিলনের মাধ্যমে অনেক মানসিক দুশ্চিন্তা ও টেনশন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, তার সঙ্গে সম্পর্কটা আরও গাঢ় করে নেয়ার সুযোগ পাবেন। উষ্ণ আলিঙ্গনের মাধ্যমে নিজেদের খুঁটিনাটি সমস্যাগুলো সলভ করতে পারবেন। আর যৌন মিলন ফ্রি এক্সারসাইজ হিসেবে খুব ভালো কাজে দেয়।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে একটু ব্রেক নিন
অবসরের পুরেটা সময়ে তো ফেসবুক আর ইউটিউবেই থাকেন। করোনা লকডাউনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা ভালো করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নাহয় একটু ব্রেক নিন। দুজনে যখন একসঙ্গে থাকবেন তখন নিজেদের ফোনটা দূরে সরিয়ে রাখুন। নিজেদেরকে সময় দিলে সম্পর্কে মধুরতা ও দৃঢ়তা তৈরি হয়। দুজনে মিলে প্রতিদিনের একটি রুটিন তৈরী করুন এবং সেটা মেইনটেইন করুন। কখন ঘুমাবেন, কখন উঠবেন, কখন খাবেন, কখন ঘরের কাজ করবেন এগুলোর জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় ফিক্স করুন। আর সবসময় গোমড়ামুখো হয়ে থাকবেন না, নিজেদের মধ্যে হাস্যরস বজায় রাখুন।
পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও সময় দিন
আপনি যদি একান্নবর্তী পরিবারে থাকেন তাহলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও সময় দেয়া আপনার কর্তব্য। লকডাউনে বাসার সবার সাথে বসে গল্প করার এমন সুযোগ পাবেন না! তাই সময় পেলেই বাড়ির সবার সঙ্গে জমিয়ে গল্প করুন। বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে দাবা, ক্যারাম কিংবা লুডু খেলতে পারেন। বাড়িতে ছোট ছেলে-মেয়ে থাকলে তাদের সঙ্গে খেলাধূলা করুন। এতে সবারই মন ভালো থাকবে। আর দাম্পত্য সম্পর্কটাও মধুর হয়ে উঠবে! পরিবারের সব সদস্যের মতামতের প্রতি সম্মান দেখান এবং ছোটখাটো তর্ক–বিতর্কগুলো এড়িয়ে চলুন। করোনা এর সময়ে পরিবারকে যত বেশি সময় দেবেন ততই সম্পর্কগুলো শক্ত-পোক্ত হবে।
মেনে চলতে হবে কিছু বিধি-নিষেধও
প্রাণঘাতী করোনা থেকে বাঁচতে ঘরে থাকলেও মেনে চলতে হবে বিধি-নিষেধও। করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। বারবার হাত ধোয়া, সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। মাঝে মধ্যে বাজারের জন্য বাইরে গেলেও বাসায় ফিরেই হাত ধুতে হবে, গোসল করতে হবে এবং অবশ্যই জামা-কাপড় সাথে সাথে ধুয়ে ফেলতে হবে। পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও শিশুদের সুরক্ষার জন্য অবশ্যই সংযত হতে হবে। শারিরীক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে মন শান্ত রেখে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
স্বামী-স্ত্রীর সুন্দর একটি দাম্পত্য জীবন আমরা সবাই চাই। অনির্দিষ্টকালের জন্য এইভাবে ঘরবন্দি জীবনযাপন একঘেঁয়েমি লাগতে পারে, বিষাদ আসতে পারে মনে। এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্য আর সচেতন হওয়াই হচ্ছে একমাত্র পথ। তাই এসব কিছু ঝেড়ে ফেলে ঘরবন্দি দিনকালকে করতে হবে সুন্দর। সবাই সুস্থ থাকুন, করোনা থেকে বাঁচতে লকডাউনে ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন।
কল করুনঃ+880-1407-004393 অথবা +88-01782-006615 এ।
আমাদের মেইল করুন taslima55bd@gmail.com
buying prescription drugs in mexico: cheapest mexico drugs – mexican drugstore online
online shopping pharmacy india http://indiaph24.store/# п»їlegitimate online pharmacies india
reputable indian pharmacies
mexican online pharmacies prescription drugs: mexican rx online – buying prescription drugs in mexico online
Thank you for sharing with us, I believe this website genuinely stands out : D
I don’t think the title of your article matches the content lol. Just kidding, mainly because I had some doubts after reading the article.
Hello there! Do you know if they make any plugins to assist with SEO?I’m trying to get my blog to rank for some targeted keywords but I’m not seeing very good gainsIf you know of any please share Many thanks!
Thank you for your sharing. I am worried that I lack creative ideas. It is your article that makes me full of hope. Thank you. But, I have a question, can you help me?
Thanks for sharing. I read many of your blog posts, cool, your blog is very good.
You actually said that fantastically! how to write a creative nonfiction essay dissertation dissertation for masters degree
Aw, this was an exceptionally good post. Taking a few minutes and actual effort to produce a great articleÖ but what can I sayÖ I procrastinate a lot and never manage to get anything done.
Hi my family member! I wish to say that this post is amazing, nice written and come with almost all significant infos. I’d like to look extra posts like this .
Thanks for ones marvelous posting! I actually enjoyed reading it, you might be a great author.I will make sure to bookmark your blog and will often come back from now on. I want to encourage one to continue your great writing, have a nice evening!
Hi there, everything is going well here and ofcourse every one is sharingfacts, that’s genuinely excellent, keep up writing.
What’s up, of course this paragraph is really good and I have learned lot of thingsfrom it concerning blogging. thanks.
I loved your blog article.Really looking forward to read more. Keep writing.
Thank you for your blog article. Will read on…
Im grateful for the post. Keep writing.
Muchos Gracias for your article.Really thank you! Really Great.