.
Published: Mon, Feb 18, 2019 11:13 AM
Updated: Sat, Nov 23, 2024 9:00 AM


দ্বিতীয় প্রেম । Taslima marriage Media

দ্বিতীয় প্রেম । Taslima marriage Media

দ্বিতীয় প্রেম

সাতদিন হল লিপি বাপের বাড়িতে এসেছে। সৌরভের সাথে সম্বন্ধ করে পাঁচ মাস আগে বিয়ে হয় লিপির। এই বিয়েতে একদম মত ছিলনা তার। তাদেরই পাড়ার ছেলে জয়ের সাথে তার ভালোবাসার কথা কানে আসতেই প্রায় হঠাৎ করেই লিপির বাবা সুবিমল বাবু মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলেন কলকাতার নামী ডাক্তার সৌরভ ব্যানার্জীর সাথে। কারণ পাড়ার ওই বখাটে ছেলেটার সাথে নিজের একমাত্র আদরের মেয়ের বিয়ে দিয়ে তার জীবনটা তিনি কিছুতেই নষ্ট হতে দিতে চান নি। 

 

     সৌরভ বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাবা সুজয় ব্যানার্জীও নামী ডাক্তার, ভালো পরিবার আর লিপিও দেখতে ও পড়াশুনায় ভালো তাই বিয়েটা হতে কোন অসুবিধা হয়নি। 

 

    বাবা জোর করে তার বিয়ে ঠিক করেছে— এই কথাটা জয়কে জানাতেই সে বলল ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি বলেই এক্ষুনি তোমাকে বিয়ে করতে পারবনা।’ লিপি বলেছিল ‘চল আমরা পালিয়ে বিয়ে করে নিই, তুমি যেমন রাখবে তাতেই আমি সুখি থাকব। আমার পক্ষে আর অন্য কাউকে ভালোবাসা সম্ভব নয়।’ জয় উত্তরে বলেছিল ‘সেটা তোমার ব্যাপার। কিন্তু আমি এখনই বিয়ের জন্য প্রস্তুত নই।’ জয়ের এই কথার পর প্রায় বাধ্য হয়েই লিপিকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। 

 

     কিন্তু নিজের সঙ্গে অনেক যুদ্ধ করেও সে কিছুতেই নিজেকে ও সৌরভকে ঠকাতে পারেনি তাই সে ফুলশয্যার রাতেই সৌরভকে তার ও জয়ের সর্ম্পকের ব্যাপারে সবকিছু  জানিয়ে দেয় আর বলে ‘আমি কোনদিনই তোমাকে ভালোবাসতে পারবোনা, জীবনে প্রথম প্রেম কেউ কোনদিন ভুলতে পারে না আর আমার ক্ষেত্রেও এর অন্যথা নয়। আমাকে বাধ্য হয়েই এই বিয়েটা করতে হয়েছে। আমার এই অপরাধের জন্য আমাকে ক্ষমা করে দিও। আর সব জানার পর তুমি যে সিদ্ধান্ত নেবে তাতেই আমি রাজি।’ শান্ত হয়ে লিপির সব কথা শোনার পর সৌরভ বলল ‘তুমি একদম ঠিক বলেছ। তোমার প্রথম প্রেম যেমন জয় তেমনিই আমার প্রথম ভালোবাসাও তুমি তাই আমিও তোমাকে ভুলতে পারবোনা। তোমাকে প্রথম দেখার পরেই আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলি। তবে তুমি যদি জয়ের কাছে ফিরে যেতে চাও আমি আপত্তি করবোনা, তোমার সুখেই আমার সুখ। তুমি যতদিন না কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছ ততদিন তুমি এই বাড়িতে নিশ্চিন্তে থাকতে পারো আমার ভালো বন্ধু হয়ে আর তুমি আজকে আমাকে যা বললে তা শুধু আমাদের মধ্যেই থাকবে।’ লিপি অবাক হয়ে সৌরভের কথাগুলো শুনতে লাগলো। সৌরভ আবার বলে উঠল ‘তুমি একটা কথা কি জানো  কোনো মানুষের জীবনে যদি দুবার ভালোবাসা হয় তবে দ্বিতীয় ভালোবাসাটাই সত্যি ভালোবাসা কারণ যদি কেউ প্রথম জনকে সত্যিই ভালোবাসে তাহলে দ্বিতীয় জনকে ভালোবাসার প্রশ্নই উঠবে না। আর আমি ডাক্তার তাই মিরাক্যালে বিশ্বাসী।’

 

     লিপি বিয়ের পর সৌরভের সাথে একই সংসারে ও একই ঘরে থাকলেও তার কোন অমর্যাদা করেনি সৌরভ। প্রকৃতপক্ষে স্বামী-স্ত্রীর সর্ম্পক গড়ে না উঠলেও সৌরভের প্রতি একটা টান অনুভব করতে শুরু করে লিপি, বিশ্বাস করতে শুরু করে তাকে। 

 

      একটা কনফারেন্সের জন্য সৌরভকে কদিনের জন্য বাইরে যেতে হয়। তাই লিপিও কয়েকদিনের জন্য তার মায়ের কাছে আসে থাকতে। 

 

      এরমধ্যে দুএকবার জয়ের সাথে দেখা হয় লিপির রাস্তায় আসা যাওয়ার পথে। গতকাল জয় ওকে একবার দেখা করতে বলেছিল।   আর কোন একটা আশায় হয়ত লিপি তার সাথে দেখা করতে গিয়েছিল। কিন্তু জয় যখন তাকে বলল ‘তোমার স্বামী তো খুব বড়লোক, তুমি ওকে ডির্ভোস দিয়ে আমার কাছে চলে এসো। খোরপোষ বাবাদ টাকা তো দেবেই এতদিন তোমার সাথে একঘরে রাত কাটিয়েছে যে।’ জয়ের এই নোংরা কথাগুলো শুনে লিপির কেমন যেন গা ঘিনঘিন করে উঠল। তার যে প্রথম ভালোবাসাকে সে কোনদিন ভুলতে পারবেনা ভেবেছিল সেই ভালোবাসা এক ঝটকায় তার মন থেকে শেষ হয়ে গেল। সে জয়ের গালে একটা চড় মেরে বলল ‘আজকে বুঝলাম বাবা আমার জীবনের জন্য একদম ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেদিন তোমাকে  আমার জীবনসঙ্গী হিসাবে নির্বাচন না করে। তোমার সঙ্গে আমার সর্ম্পকটার এখানেই ইতি টানলাম’— এই বলে সে ফিরে এসেছিল বাড়িতে। 

 

     গতকাল রাতে ভালো ঘুম হল না লিপির। ভোর হতে সে নিজের জন্য এক কাপ চা তৈরি করে নিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসল। বাড়ির সবাই তখনও ঘুমের দেশে। নিজের ভুলের জন্য কিছুতেই ক্ষমা করতে পারছিলনা নিজেকে সে। 

 

      নভেম্বরের এই সময়টা ঠান্ডা হিমেল হাওয়া আর ভোরেরবেলায় সবুজ ঘাসের উপর শিশিরবিন্দু তাদের চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী জানান দিচ্ছিল শীত এসে গিয়েছে। চারিদিক কুয়াশার চাদরে মুড়ে প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে একাকার। কিন্তু কিছুই যে ভালো লাগছেনা লিপির। তবে সে একটা ব্যাপার কিছুতেই বুঝতে পারছেনা নিজে ঠকে যাওয়ার থেকে আজ সৌরভের প্রাপ্য অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করার জন্য বেশি কষ্ট ও অনুশোচনা হচ্ছে কেন তার। নিজের মনে মনে সে ভাবতে লাগল তবে কি সৌরভের কথাই ঠিক, সে কি সৌরভকে ভালোবাসতে শুরু করল, দ্বিতীয়বার প্রেমে পড়ল সে। 

 

      নিজের মনের সঙ্গে যুদ্ধ করে সারাটা দিন কাটালো লিপি। আজ সৌরভের দিল্লি থেকে ফিরে সোজা তাদের বাড়িতে আসার কথা। সৌরভের বাবা, মা কয়েকদিনের জন্য তাদের দেশের বাড়িতে যাওয়ায় আর লিপিদের বাড়ীটা এয়ারপোর্টের কাছে হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত। সেখান থেকে রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে তারা ফিরবে নিজেদের বাড়ি। 

 

      ফ্লাইট লেট থাকায় সৌরভের ফিরতে সন্ধ্যে হয়ে গেল। ফিরেই সৌরভ নিজের প্রশ্নের উত্তরে জানতে পারল লিপি ছাদে। লিপির মা বলল ‘তুমি ফ্রেস হয়ে নাও আমি ওকে ডেকে আনছি। তারপর সবাই একসাথে বসে চা খাওয়া যাবে।’ সৌরভ বলল ‘মা বেশ ঠান্ডা  ঠান্ডা পড়ছে লিপি খোলা ছাদে বসে আছে, পাতলা একটা চাদর গায়ে দিয়েছে তো? ওর তো আবার ঠান্ডার ধাত আছে।’ 

 

       এরমধ্যেই লিপি ছাদ থেকে নামতে নামতে সৌরভের কথাগুলি শুনতে পেল। এক অদ্ভুত ভালোলাগায় তার মনের ক্ষতের উপর যেন ভালোবাসার প্রলেপ পড়ল। আর সকাল থেকে যে প্রশ্নটা তাকে তাড়া করে বেরাচ্ছিল তার উত্তরও সে পেল। তবে সৌরভ তার জীবনের দ্বিতীয় প্রেম নয় সত্যি ভালোবাসা। 

matrimonial

matrimony

matchmaking

matchmaker

patro patri

biye shaado 

bride groom

lifepartner

marriage media

hindu marrige media

ghotok


Register now to talk with your life parner.   Do you have account?   Login  
Categories: Love Story,
Tags: Bangla Matrimonial
This post read 2108 times.
Taslima Marriage Media Blog


Suggested Posts